উত্তর: মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ এর ধারা ৭৩ অনুযায়ী কর নির্ধারণ করা হয়। সাধারণত কয়েকটি পদ্ধতিতে কর নির্ধারণ করা হয়, যথা-
১. রিটার্ন দাখিল না করলে;
২. রিটার্ন পরীক্ষা করে প্রদেয় মূসক পরিশোধ কম উৎঘাটিত হলে অর্থাৎ রিটার্নে উৎপাদ কর, উপকরণ কর রেয়াত, বৃদ্ধিকারী সমন্বয়, হ্রাসকারী সমন্বয় ইত্যাদি যথাযথভাবে না করায় প্রদেয় মূসক পরিশোধ কম/ফাঁকি উৎঘাটিত হলে;
৩. মিথ্যা/অসত্য ঘোষণা/জালিয়াতি করে প্রদেয় কর কম পরিশোধ করলে;
৪. ব্যক্তি কর্তৃক পাওনার অতিরিক্ত অর্থ প্রত্যর্পণ বা ফেরত নেয়া হলে;
৫. ধারা-৮৩ এর অধীন মূসক ফরম ১২.৩ দ্বারা দলিলাদি জব্দ করার পর কর দলিলাদি পরীক্ষা করে মূসক ফাঁকি উৎঘাটিত হলে।
৬. অডিট বা নিরীক্ষা করে প্রদেয় মূসক পরিশোধ কম/ফাঁকি উৎঘাটিত হলে।
এই ৬ টি পদ্ধতি সম্পর্কে নিম্নে বিষদ দেয়া হয়েছে।
ধারা ৮৬ তে উল্লিখিত নিম্নবর্ণিত সারণীতে উল্লিখিত আর্থিক ক্ষমতা সাপেক্ষে যথোপযুক্ত কর্মকর্তা কোন ব্যক্তিকে তৎকর্তৃক প্রদেয় কর নির্ধারণের জন্য ধারা-৭৩(১) অনুযায়ী ফরম “মূসক-১২.১২” এ প্রাথমিক কারণ দর্শানো নোটিশ প্রদান করেন, যথা:―
ক্রমিক নং | কর্মকর্তা | ক্ষমতা |
(১) | (২) | (৩) |
(ক) | কমিশনার | পণ্য মূল্য বা করযোগ্য সেবা মূল্য ১ (এক) কোটি টাকার অধিক হইলে; |
(খ) | অতিরিক্ত কমিশনার | পণ্য মূল্য বা করযোগ্য সেবা মূল্য অনধিক ১ (এক) কোটি টাকা হইলে; |
(গ) | যুগ্ম কমিশনার | পণ্য মূল্য বা করযোগ্য সেবা মূল্য অনধিক ৫০ (পঞ্চাশ) লক্ষ টাকা হইলে; |
(ঘ) | উপ-কমিশনার | পণ্য মূল্য বা করযোগ্য সেবা মূল্য অনধিক ৩০ (ত্রিশ) লক্ষ টাকা হইলে; |
(ঙ) | সহকারী কমিশনার | পণ্য মূল্য বা করযোগ্য সেবা মূল্য অনধিক ২০ (বিশ) লক্ষ টাকা হইলে; |
(চ) | রাজস্ব কর্মকর্তা | পণ্য মূল্য বা করযোগ্য সেবা মূল্য অনধিক ৫ (পাঁচ) লক্ষ টাকা হইলে: |
১। রিটার্ন দাখিল না করলে কর নির্ধারণ পদ্ধতি:
কোন নিবন্ধিত বা তালিকাভুক্ত ব্যক্তি কোন কর মেয়াদে দাখিলপত্র পেশ না করলে (ধারা ৬৪ এর উপ-ধারা (১) এ বর্ণিত সময়ের মধ্যে দাখিলপত্র পেশ করিতে ব্যর্থ হলে) বিধি-৫৭ক অনুযায়ীফরম “মূসক-১১.১” এ কমিশনার বা ধারা ৮৬ এর সারণীতে বর্ণিত যথোপযুক্ত কর্মকর্তা তাকে ২১ দিনের মধ্যে দাখিলপত্র পেশ করার জন্য নোটিশ প্রদান করেন এবং ৫,০০০ টাকা জরিমানা আরোপ করেন।
নোটিশ প্রদানের ২১ (একুশ) দিনের মধ্যে যদি উক্ত ব্যক্তি দাখিলপত্র পেশ করতে ব্যর্থ হন, তাহলে সংশ্লিষ্ট কমিশনার বা ধারা ৮৬ এর সারণীতে বর্ণিত যথোপযুক্ত কর্মকর্তা প্রদেয় কর নির্ধারণের জন্য ধারা-৭৩(১) অনুযায়ী ফরম “মূসক-১২.১২” এ প্রাথমিক কারণ দর্শানো নোটিশ প্রদান করেন। উল্লেখ্য যে, প্রদেয় কর উক্ত ব্যক্তির ক্রয়, বিক্রয়, রেয়াত, সমন্বয়, উপকরণ-উৎপাদ সহগ, বিভিন্ন ধরনের খরচ ইত্যাদি হিসাব করে বের করা হয়। নোটিশ দেয়ার পর রিটার্ন দাখিল না করলে কখনও কখনও ধারা-৮৩ অনুযায়ী দলিলাদি আটক করেও ক্রয়-বিক্রয় তথ্য ও অন্যান্য খরচ ইত্যাদি হিসাব করে কর নির্ধারণ করা হয়। ধারা ৭৩(২) অনুযায়ী চূড়ান্ত কর নির্ধারণ করা হয়।
চূড়ান্ত কর নির্ধারণের লক্ষ্যে শুনানী গ্রহণ করা হয় এবং শুনানী শেষে ব্যক্তি কর্তৃক আপত্তি দাখিলের ১২০ (একশত বিশ) দিনের মধ্যে ধারা-৭৩(২) অনুযায়ী মূসক ‘ফরম-১২.৩’ এ কর নির্ধারণ ও জরিমানা আরোপের চূড়ান্ত আদেশ প্রদান করা হয়। ধারা-৮৫ ও বিধি-৬৫ অনুযায়ী কর নির্ধারণের আদেশের সাথেই যুগপৎভাবে জরিমানা আরোপ করা হয়।
অনিবন্ধিত ব্যক্তির ক্ষেত্রে:
অনিবন্ধিত ব্যক্তির ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ধারা-৪ অনুযায়ী নিবন্ধনযোগ্য হলে প্রথমে উক্ত ব্যক্তিকে বিভাগীয় কর্মকর্তা ফরম ‘মূসক-২.৩’ এ নিবন্ধন দিবেন। নিবন্ধন দেয়ার পর উক্ত ব্যক্তির ক্রয়, বিক্রয়, সমন্বয়, বিভিন্ন ধরনের খরচ ইত্যাদি হিসাব করে কর নির্ধারণ করা হয়।
কোন নিবন্ধিত বা তালিকাভুক্ত ব্যক্তি কোন কর মেয়াদে দাখিলপত্র পেশ না করলে (ধারা ৬৪ এর উপ-ধারা (১) এ বর্ণিত সময়ের মধ্যে দাখিলপত্র পেশ করিতে ব্যর্থ হলে) বিধি-৫৭ক অনুযায়ীফরম “মূসক-১১.১” এ কমিশনার বা ধারা ৮৬ এর সারণীতে বর্ণিত যথোপযুক্ত কর্মকর্তা তাকে ২১ দিনের মধ্যে দাখিলপত্র পেশ করার জন্য নোটিশ প্রদান করেন। মোট যে কয়টি করমেয়াদের রিটার্ন বাকী আছে প্রতিটার জন্যই একটি করে নোটিশ প্রদান এবং ৫,০০০ টাকা জরিমানা আরোপ করেন।
নোটিশ প্রদানের ২১ (একুশ) দিনের মধ্যে যদি উক্ত ব্যক্তি দাখিলপত্র পেশ করতে ব্যর্থ হন, তাহলে সংশ্লিষ্ট কমিশনার বা ধারা ৮৬ এর সারণীতে বর্ণিত যথোপযুক্ত কর্মকর্তা প্রদেয় কর নির্ধারণের জন্য ধারা-৭৩(১) অনুযায়ী ফরম “মূসক-১২.১২” এ প্রাথমিক কারণ দর্শানো নোটিশ প্রদান করেন। উল্লেখ্য যে, প্রদেয় কর উক্ত ব্যক্তির ক্রয়, বিক্রয়, রেয়াত, সমন্বয়, উপকরণ-উৎপাদ সহগ, বিভিন্ন ধরনের খরচ ইত্যাদি হিসাব করে বের করা হয়। নোটিশ দেয়ার পর রিটার্ন দাখিল না করলে কখনও কখনও ধারা-৮৩ অনুযায়ী দলিলাদি আটক করেও ক্রয়-বিক্রয় তথ্য ও অন্যান্য খরচ ইত্যাদি হিসাব করে কর নির্ধারণ করা হয়। ধারা ৭৩(২) অনুযায়ী চূড়ান্ত কর নির্ধারণ করা হয়।
চূড়ান্ত কর নির্ধারণের লক্ষ্যে শুনানী গ্রহণ করা হয় এবং শুনানী শেষে ব্যক্তি কর্তৃক আপত্তি দাখিলের ১২০ (একশত বিশ) দিনের মধ্যে ধারা-৭৩(২) অনুযায়ী মূসক ‘ফরম-১২.৩’ এ কর নির্ধারণ ও জরিমানা আরোপের চূড়ান্ত আদেশ প্রদান করা হয়। ধারা-৮৫ ও বিধি-৬৫ অনুযায়ী কর নির্ধারণের আদেশের সাথেই যুগপৎভাবে জরিমানা আরোপ করা হয়।
২। রিটার্ন পরীক্ষা করে প্রদেয় মূসক পরিশোধ কম উৎঘাটিত হলে অর্থাৎ রিটার্নে উৎপাদ কর, উপকরণ কর রেয়াত, বৃদ্ধিকারী সমন্বয়, হ্রাসকারী সমন্বয় ইত্যাদি যথাযথভাবে না করায় প্রদেয় মূসক পরিশোধ কম/ফাঁকি উৎঘাটিত হলে কর নির্ধারণ পদ্ধতি:
সাধারণত ব্যক্তি কর্তৃক দাখিলকৃত প্রতি মাসের রিটার্ন (মূসক ফরম ৯.১ বা ৯.২) ভ্যাট সার্কেল কর্তৃক পরীক্ষা করা হয়। রিটার্ন সন্নিবেশিত তথ্য ছাড়াও উক্ত ব্যক্তির প্রকৃত ক্রয়, বিক্রয়, উৎসে কর্তন, রেয়াত, সমন্বয়, উপকরণ-উৎপাদ সহগ, বিভিন্ন ধরনের খরচ ইত্যাদি পরীক্ষা করা হয়। দাখিলপত্র/রিটার্ন পরীক্ষা করে মূসক পরিশোধ কম/ফাঁকি উৎঘাটিত হলে উক্ত ব্যক্তিকে সংশ্লিষ্ট কমিশনার বা ধারা ৮৬ এর সারণীতে বর্ণিত যথোপযুক্ত কর্মকর্তা প্রদেয় কর নির্ধারণের জন্য ধারা-৭৩(১) অনুযায়ী ফরম “মূসক-১২.১২” এ প্রাথমিক কারণ দর্শানো নোটিশ প্রদান করেন।
চূড়ান্ত কর নির্ধারণের লক্ষ্যে শুনানী গ্রহণ করা হয় এবং শুনানী শেষে ব্যক্তি কর্তৃক আপত্তি দাখিলের ১২০ (একশত বিশ) দিনের মধ্যে ধারা-৭৩(২) অনুযায়ী মূসক ‘ফরম-১২.৩’ এ কর নির্ধারণ ও জরিমানা আরোপের চূড়ান্ত আদেশ প্রদান করা হয়। ধারা-৮৫ ও বিধি-৬৫ অনুযায়ী কর নির্ধারণের আদেশের সাথেই যুগপৎভাবে জরিমানা আরোপ করা হয়।
৩। মিথ্যা/অসত্য ঘোষণা/জালিয়াতি করে প্রদেয় কর কম পরিশোধ করলে কর নির্ধারণ পদ্ধতি:
সাধারণত ব্যক্তি কর্তৃক দাখিলকৃত প্রতি মাসের রিটার্ন (মূসক ফরম ৯.১ বা ৯.২) ভ্যাট সার্কেল কর্তৃক পরীক্ষা করা হয়। রিটার্ন সন্নিবেশিত তথ্য ছাড়াও উক্ত ব্যক্তির প্রকৃত ক্রয়, বিক্রয়, উৎসে কর্তন, রেয়াত, সমন্বয়, উপকরণ-উৎপাদ সহগ, বিভিন্ন ধরনের খরচ ইত্যাদি পরীক্ষা করা হয়। দাখিলপত্র/রিটার্ন পরীক্ষা করে মূসক পরিশোধ কম/ফাঁকি উৎঘাটিত হলে এবং উক্ত মূসক ফাঁকির সাথে জাল বা ভুয়া ব্যবসা সনাক্তকরণ সংখ্যা সম্বলিত মূসক নিবন্ধন সনদপত্র বা টার্নওভার কর সনদপত্র বা উৎসে কর কর্তন সনদপত্র, কর চালানপত্র, ক্রেডিট নোট, ডেবিট নোট, উৎসে কর কর্তন সনদপত্র বা অন্য কোন দলিলাদি জাল/অসত্য পাওয়া গেলে বা যদি কোন ব্যক্তি অসৎ উদ্দেশ্যে কোন কর দলিলাদিতে মূসক কর্মকর্তার নিকট মিথ্যা, বিভ্রান্তিকর বিবরণ বা বিবৃতি প্রদান করেন, তবে কর নির্ধারণ করা হয়।
রিটার্ন সন্নিবেশিত তথ্য ছাড়াও উক্ত ব্যক্তির প্রকৃত ক্রয়, বিক্রয়, উৎসে কর্তন, রেয়াত, সমন্বয়, উপকরণ-উৎপাদ সহগ, বিভিন্ন ধরনের খরচ ইত্যাদি পরীক্ষা করা হয়। দাখিলপত্র/রিটার্ন পরীক্ষা করে মূসক পরিশোধ কম/ফাঁকি উৎঘাটিত হলে উক্ত ব্যক্তিকে সংশ্লিষ্ট কমিশনার বা ধারা ৮৬ এর সারণীতে বর্ণিত যথোপযুক্ত কর্মকর্তা প্রদেয় কর নির্ধারণের জন্য ধারা-৭৩(১) অনুযায়ী ফরম “মূসক-১২.১২” এ প্রাথমিক কারণ দর্শানো নোটিশ প্রদান করেন।
চূড়ান্ত কর নির্ধারণের লক্ষ্যে শুনানী গ্রহণ করা হয় এবং শুনানী শেষে ব্যক্তি কর্তৃক আপত্তি দাখিলের ১২০ (একশত বিশ) দিনের মধ্যে ধারা-৭৩(২) অনুযায়ী মূসক ‘ফরম-১২.৩’ এ কর নির্ধারণ করে চূড়ান্ত আদেশ প্রদান করা হয়।
যে ব্যক্তি উক্ত মিথ্যা/অসত্য ঘোষণা/জালিয়াতির সাথে জড়িত সেই ব্যক্তির নামে কমিশনার কর্তৃক মনোনীত কর্মকর্তা কর্তৃক ধারা-১১১ ও ১১২ অনুযায়ী ফৌজদারি মামলা দায়ের করা হয়। উল্লিখিত অপরাধ প্রমাণিত হলে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট অনূর্ধ্ব ১ বছর কারাদণ্ড বা প্রদেয় করের সমপরিমাণ অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করতে পারেন।
৪। ব্যক্তি কর্তৃক পাওনার অতিরিক্ত অর্থ প্রত্যর্পণ বা ফেরত নেয়া হলে কর নির্ধারণ পদ্ধতি:
ধারা ৬৮ অনুযায়ী যদি কোন কর মেয়াদে উপকরণ কর এবং প্রাপ্য হ্রাসকারী সমন্বয়ের সমষ্টি, উৎপাদ কর, সম্পূরক শুল্ক এবং বৃদ্ধিকারী সমন্বয়ের সমষ্টিকে অতিক্রমের কারণে উক্ত কর মেয়াদে প্রদেয় নীট অর্থের পরিমাণ ঋণাত্মক হয়, তাহলে অতিরিক্ত পরিমাণ অর্থ জের টানতে হয়। প্রদেয় শুল্ক-করের অতিরিক্ত শুল্ক-কর পরিশোধ করার কারণে বা কোন অর্থ সমন্বয়যোগ্য না হওয়ার কারণে অর্থাৎ সরকার কর্তৃক পাওনার অতিরিক্ত কর বা শুল্ক করদাতা কর্তৃক পরিশোধ হয়ে থাকলে উক্ত টাকা ফেরত নেয়া যায়। এক্ষেত্রে করদাতাকে রিটার্নের (মূসক ৯.১) নোট ৬৭ ও ৬৮ এর মাধ্যমে যথাক্রমে ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক ফেরতের আবেদন করতে হয়। আবেদন প্রাপ্তির পর কমিশনার করদাতাকে ৬ করমেয়াদ পর্যন্ত হ্রাসকারী সমন্বয়ের সুযোগ দেন। ৬ করমেয়াদের মধ্যে করদাতা কর্তৃক পাওনা টাকা সমন্বয়যোগ্য না হলে উক্ত টাকা কমিশনার কর্তৃক ফেরত দেয়া হয়। তবে পাওনা টাকা ৫০,০০০ টাকার অধিক না হলে পুনরায় জের টানতে হয়। ধারা ৭০ অনুযায়ী সরকার কর্তৃক উক্ত ব্যক্তির নিকট পাওনা নেই মর্মে নিশ্চিত হয়ে কমিশনার করদাতার ব্যাংক হিসাবে করদাতার পাওনা টাকা জমা করেন বা চেক ইস্যু করেন।
ধারা ৬৯ অনুযায়ী যদি কোন ব্যক্তির মোট বিক্রয়ের ৫০% বা এর অধিক বিক্রয় রপ্তানি সংশ্লিষ্ট হয় বা ক্রয়কৃত মোট উপকরণের ৫০% বা এর অধিক রপ্তানিযোগ্য পণ্য উৎপাদনে ব্যবহৃত হয়, তবে উক্ত ব্যক্তির প্রদেয় কর সবসময় ঋণাত্বক হয়। অর্থাৎ উক্ত ব্যক্তি সরকারের নিকট পাওনা হয়। এক্ষেত্রে উক্ত ব্যক্তি উপকরণ কর রেয়াত বা পাওনা কোন মাসেই সমন্বয় করতে পারে না। এমনকি আমদানি পর্যায়ে উপকরণের উপর পরিশোধিত সম্পূরক শুল্কও সমন্বয় করতে পারে না। এক্ষেত্রে করদাতা কর্তৃক আবেদনের প্রেক্ষিতে কমিশনার ৬ মাসের জের টানা ব্যতিত ধারা ৭০ অনুযায়ী সরকার কর্তৃক উক্ত ব্যক্তির নিকট পাওনা নেই মর্মে নিশ্চিত হয়ে কমিশনার করদাতার ব্যাংক হিসাবে আবেদনের ৩ মাসের মধ্যে করদাতার পাওনা টাকা জমা করেন বা চেক ইস্যু করেন। তবে পাওনা টাকা ৫০,০০০ টাকার অধিক না হলে পরবর্তী করমেয়াদে হ্রাসকারী সমন্বয়ের লক্ষ্যে জের টানতে হয়।
ব্যক্তি কর্তৃক ধারা ৬৮ বা ৬৯ অনুযায়ী রিফান্ড বা ফেরত নেয়া হয় এবং ধারা-৬২ অনুযায়ী প্রত্যর্পণ নেয়া হয়। যদি কোন কারণে ব্যক্তি কর্তৃক পাওনার অতিরিক্ত ফেরত বা প্রত্যর্পণ নেয়া হয়, তবে ধারা ৭৩ অনুযায়ী চূড়ান্ত কর নির্ধারণ করা হয়। সাধারণত ব্যক্তি কর্তৃক দাখিলকৃত প্রতি মাসের রিটার্ন (মূসক ফরম ৯.১ বা ৯.২) ভ্যাট সার্কেল কর্তৃক পরীক্ষা করা হয়। রিটার্ন সন্নিবেশিত তথ্য ছাড়াও উক্ত ব্যক্তির প্রকৃত ক্রয়, বিক্রয়, উৎসে কর্তন, রেয়াত, সমন্বয়, উপকরণ-উৎপাদ সহগ, বিভিন্ন ধরনের খরচ ইত্যাদি পরীক্ষা করা হয়। দাখিলপত্র বা অন্যকোন দলিলাদি পরীক্ষা করে ব্যক্তি কর্তৃক পাওনার অতিরিক্ত অর্থ ফেরত বা প্রত্যর্পণ নেয়া হলে, কর নির্ধারণ করা হয়।
পাওনার অতিরিক্ত অর্থ ফেরত বা প্রত্যর্পণ নেয়া হলে উক্ত ব্যক্তিকে সংশ্লিষ্ট কমিশনার বা ধারা ৮৬ এর সারণীতে বর্ণিত যথোপযুক্ত কর্মকর্তা প্রদেয় কর নির্ধারণের জন্য ধারা-৭৩(১) অনুযায়ী ফরম “মূসক-১২.১২” এ প্রাথমিক কারণ দর্শানো নোটিশ প্রদান করেন। চূড়ান্ত কর নির্ধারণের লক্ষ্যে শুনানী গ্রহণ করা হয় এবং শুনানী শেষে ব্যক্তি কর্তৃক আপত্তি দাখিলের ১২০ (একশত বিশ) দিনের মধ্যে ধারা-৭৩(২) অনুযায়ী মূসক ‘ফরম-১২.৩’ এ কর নির্ধারণ ও জরিমানা আরোপের চূড়ান্ত আদেশ প্রদান করা হয়। ধারা-৮৫ ও বিধি-৬৫ অনুযায়ী কর নির্ধারণের আদেশের সাথেই যুগপৎভাবে জরিমানা আরোপ করা হয়।
উক্ত মূসক ফাঁকির সাথে জাল বা ভুয়া ব্যবসা সনাক্তকরণ সংখ্যা সম্বলিত মূসক নিবন্ধন সনদপত্র বা টার্নওভার কর সনদপত্র বা উৎসে কর কর্তন সনদপত্র, কর চালানপত্র, ক্রেডিট নোট, ডেবিট নোট, উৎসে কর কর্তন সনদপত্র বা অন্য কোন দলিলাদি জাল/অসত্য পাওয়া গেলে বা যদি কোন ব্যক্তি অসৎ উদ্দেশ্যে কোন কর দলিলাদিতে মূসক কর্মকর্তার নিকট মিথ্যা, বিভ্রান্তিকর বিবরণ বা বিবৃতি প্রদান করলে যে ব্যক্তি উক্ত মিথ্যা/অসত্য ঘোষণা/জালিয়াতির সাথে জড়িত সেই ব্যক্তির নামে কমিশনার কর্তৃক মনোনীত কর্মকর্তা কর্তৃক ধারা-১১১ ও ১১২ অনুযায়ী ফৌজদারি মামলা দায়ের করা হয়। উল্লিখিত অপরাধ প্রমাণিত হলে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট অনূর্ধ্ব ১ বছর কারাদণ্ড বা প্রদেয় করের সমপরিমাণ অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করতে পারেন।
৫. ধারা-৮৩ এর অধীন মূসক ফরম ১২.৩ দ্বারা দলিলাদি জব্দ করার পর কর দলিলাদি পরীক্ষা করে মূসক ফাঁকি উৎঘাটিত হলে কর নির্ধারণ পদ্ধতি:
কোন প্রতিষ্ঠান Non-compliant হলে উক্ত প্রতিষ্ঠানে প্রবেশ ও তল্লাশির জন্য ধারা ৮৩ অনুযায়ী কমিশনার বা মহাপরিচালক, সহকারী কমিশনার বা সহকারী পরিচালক পদমর্যাদার নিম্নে নয় এরূপ যে কোন মূসক কর্মকর্তা যেকোন স্থান, অঙ্গন, ঘরবাড়ি, যানবাহন, ইত্যাদিতে প্রবেশ, তল্লাশি এবং, ক্ষেত্রমত, জব্দকরণ ও আটক করতে পারেন। বিধি-৬০ অনুযায়ী কমিশনার ফরম মূসক-১২.১ এ ক্ষমতা প্রদান করেন। স্থানটি আবাসস্থল হলে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মূসক-১২.২ এ সংশ্লিষ্ট স্থানের স্বত্বাধিকারীকে বা উহার দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে নোটিশ প্রদান করেন।
মূসক-১২.৩ অনুযায়ী দলিলাদি বা পণ্য বা যানবাহন বা যেকোন কিছু আটক করা যায়। আটক করার পর ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কর্তৃক ৫ কার্যদিবসের মধ্যে কমিশনার বরাবর মূসক-১২.৪ এ প্রাথমিক প্রতিবেদন এবং ৩০ দিনের মধ্যে মূসক-১২.৫ এ চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে হয়। রিটার্ন সন্নিবেশিত তথ্য ছাড়াও উক্ত ব্যক্তির প্রকৃত ক্রয়, বিক্রয়, উৎসে কর্তন, রেয়াত, সমন্বয়, উপকরণ-উৎপাদ সহগ, বিভিন্ন ধরনের খরচ ইত্যাদি পরীক্ষা করা হয়। দাখিলপত্র/রিটার্ন পরীক্ষা করে মূসক পরিশোধ কম/ফাঁকি উৎঘাটিত হলে মূসক-১২.৫ এর সাথে মূসক-১২.৬ দ্বারা মামলা দায়ের করা হয়।
মামলা দায়ের হলে উক্ত ব্যক্তিকে সংশ্লিষ্ট কমিশনার বা ধারা ৮৬ এর সারণীতে বর্ণিত যথোপযুক্ত কর্মকর্তা প্রদেয় কর নির্ধারণের জন্য ধারা-৭৩(১) অনুযায়ী ফরম “মূসক-১২.১২” এ প্রাথমিক কারণ দর্শানো নোটিশ প্রদান করেন। চূড়ান্ত কর নির্ধারণের লক্ষ্যে শুনানী গ্রহণ করা হয় এবং শুনানী শেষে ব্যক্তি কর্তৃক আপত্তি দাখিলের ১২০ (একশত বিশ) দিনের মধ্যে ধারা-৭৩(২) অনুযায়ী মূসক ‘ফরম-১২.৩’ এ কর নির্ধারণ ও জরিমানা আরোপের চূড়ান্ত আদেশ প্রদান করা হয়। ধারা-৮৫ ও বিধি-৬৫ অনুযায়ী কর নির্ধারণের আদেশের সাথেই যুগপৎভাবে জরিমানা আরোপ করা হয়।
উক্ত মূসক ফাঁকির সাথে জাল বা ভুয়া ব্যবসা সনাক্তকরণ সংখ্যা সম্বলিত মূসক নিবন্ধন সনদপত্র বা টার্নওভার কর সনদপত্র বা উৎসে কর কর্তন সনদপত্র, কর চালানপত্র, ক্রেডিট নোট, ডেবিট নোট, উৎসে কর কর্তন সনদপত্র বা অন্য কোন দলিলাদি জাল/অসত্য পাওয়া গেলে বা যদি কোন ব্যক্তি অসৎ উদ্দেশ্যে কোন কর দলিলাদিতে মূসক কর্মকর্তার নিকট মিথ্যা, বিভ্রান্তিকর বিবরণ বা বিবৃতি প্রদান করলে যে ব্যক্তি উক্ত মিথ্যা/অসত্য ঘোষণা/জালিয়াতির সাথে জড়িত সেই ব্যক্তির নামে কমিশনার কর্তৃক মনোনীত কর্মকর্তা কর্তৃক ধারা-১১১ ও ১১২ অনুযায়ী ফৌজদারি মামলা দায়ের করা হয়। উল্লিখিত অপরাধ প্রমাণিত হলে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট অনূর্ধ্ব ১ বছর কারাদণ্ড বা প্রদেয় করের সমপরিমাণ অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করতে পারেন।
৬. অডিট বা নিরীক্ষা করে প্রদেয় মূসক পরিশোধ কম/ফাঁকি উৎঘাটিত হলে কর নির্ধারণ পদ্ধতি:
ধারা ৯০ অনুযায়ী করদাতার বা ব্যক্তির অর্থনৈতিক কার্যক্রম নিরীক্ষা এবং অনুসন্ধান করা হয়। নিরীক্ষার জন্য নির্বাচিত প্রতিষ্ঠানকে বিভিন্ন দলিলাদি দাখিলের জন্য নিরীক্ষা দল কর্তৃক পত্র দেয়া হয়। দলিলাদি প্রাপ্তির পর নিরীক্ষা দল
কমিশনার বা মহাপরিচালক লিখিত আদেশ দ্বারা নিরীক্ষা দল গঠন করেন। নিরীক্ষা দল করদাতার করদায় নিরূপণ করে নিরীক্ষা রিপোর্ট কমিশনার বা মহাপরিচালক বরাবর প্রদান করেন। নিরীক্ষিত কর মেয়াদে করদাতার প্রদেয় করের দায় উদঘাটিত হলে, কমিশনার বা মহাপরিচালক কর নির্ধারণ করেন।
উক্ত ব্যক্তিকে সংশ্লিষ্ট কমিশনার বা মহাপরিচালক প্রদেয় কর নির্ধারণের জন্য ধারা-৭৩(১) অনুযায়ী ফরম “মূসক-১২.১২” এ প্রাথমিক কারণ দর্শানো নোটিশ প্রদান করেন। চূড়ান্ত কর নির্ধারণের লক্ষ্যে শুনানী গ্রহণ করা হয় এবং শুনানী শেষে ব্যক্তি কর্তৃক আপত্তি দাখিলের ১২০ (একশত বিশ) দিনের মধ্যে ধারা-৭৩(২) অনুযায়ী মূসক ‘ফরম-১২.৩’ এ কর নির্ধারণ ও জরিমানা আরোপের চূড়ান্ত আদেশ প্রদান করা হয়। ধারা-৮৫ ও বিধি-৬৫ অনুযায়ী কর নির্ধারণের আদেশের সাথেই যুগপৎভাবে জরিমানা আরোপ করা হয়।
উক্ত কর দায় এর সাথে জাল বা ভুয়া ব্যবসা সনাক্তকরণ সংখ্যা সম্বলিত মূসক নিবন্ধন সনদপত্র বা টার্নওভার কর সনদপত্র বা উৎসে কর কর্তন সনদপত্র, কর চালানপত্র, ক্রেডিট নোট, ডেবিট নোট, উৎসে কর কর্তন সনদপত্র বা অন্য কোন দলিলাদি জাল/অসত্য পাওয়া গেলে বা যদি কোন ব্যক্তি অসৎ উদ্দেশ্যে কোন কর দলিলাদিতে মূসক কর্মকর্তার নিকট মিথ্যা, বিভ্রান্তিকর বিবরণ বা বিবৃতি প্রদান করলে যে ব্যক্তি উক্ত মিথ্যা/অসত্য ঘোষণা/জালিয়াতির সাথে জড়িত সেই ব্যক্তির নামে কমিশনার কর্তৃক মনোনীত কর্মকর্তা কর্তৃক ধারা-১১১ ও ১১২ অনুযায়ী ফৌজদারি মামলা দায়ের করা হয়। উল্লিখিত অপরাধ প্রমাণিত হলে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট অনূর্ধ্ব ১ বছর কারাদণ্ড বা প্রদেয় করের সমপরিমাণ অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করতে পারেন।